বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারের পরিকল্পনা ও ডিজাইনের ছোয়া এবার কাতারে। ২০ নভেম্বর শুরু হতে চলেছে “দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ” বিশ্বকাপ ফুটবল। বিশ্বকাপ চলাকালীন কাতারের যে আটটি স্টেডিয়ামের দিকে নজর রাখবে বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক, তারই একটি এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম।
যা এবারের বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলির মধ্যে অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষণীয় স্টেডিয়াম। সেই স্টেডিয়ামের নেপথ্যে রয়েছেন এক বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার। হ্যাঁ, এই বাঙালির হাতেই তৈরি হয়েছে কাতারের আকর্ষণীয় স্টেডিয়ামটি।
এই এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম নির্মান, ডিজাইন ও পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন নীলফামারীর ইঞ্জিনিয়ার ওয়াশিকুর রহমান শুভ। তিনি এখন পেশাগত দায়িত্ব সামলানোর জন্য কাতার থাকেন। দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ ফুটবল। এই উপলক্ষে মরুভূমির দেশ কাতারে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন অনেক স্টেডিয়াম।
এ বারের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য ৩২টি দেশ কাতারজুড়ে আটটি স্টেডিয়ামে শিরোপা দখলের লড়াইয়ে নামবে। এই আটটি স্টেডিয়ামের মধ্যে আল রায়ান শহরে অবস্থিত এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম একটি। এই স্টেডিয়াম নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের বাসিন্দা কাতার প্রবাসী ওয়াশিকুর রহমান শুভ।
স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজে কাঠামোগত ডিজাইন ও পরিকল্পনায় প্রধান ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কাতারের রাজধানী দোহার কেন্দ্রস্থল থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে আল-রায়ান এলাকা। এই শহরেই অবস্থিত এই আকর্ষণীয় এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষেই সেখানে তৈরী করা হয়েছে স্টেডিয়ামটি।
এই স্টেডিয়ামের নামকরণের সঙ্গেও রয়েছে একটি পরিকল্পনা। দোহার আল রায়ান এলাকায় রয়েছে, কাতারের বেশিরভাগ নামকরা স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারণেই মূলত এই স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম।
ইঞ্জিনিয়ার ওয়াশিকুর রহমান শুভর বাবা শেখ নাজমুল হক। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সব চেয়ে বড় ওয়াশিকুর। তিনি স্থানীয় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেছিলেন। এরপর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশুনা করেন।
তারপর খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকত্তোর ডিগ্রি অর্জন করার পর পাড়ি দেন দুবাইয়ে। সেখান থেকে ২০১০ সালে স্টেডিয়ামের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন কাতারে।
ওয়াশিকুর রহমান শুভ এর আগে যুক্তরাজ্যের এটকিস ইউকে এবং এসএনসি লাভালিন কানাডার কোম্পানিসহ আমেরিকা ও ইউরোপীয় কনসালটিং ফার্মেও ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন। স্টেডিয়াম নির্মাণের পর, তিনি বর্তমানে কাতারের লুসেইল সিটিতে ওয়াটার পার্ক প্রকল্পে অন্যতম মূল ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন।
যা কাতার বিশ্বকাপের ফ্যান জোন হিসাবে ব্যবহার করা হবে। বিশাল হোটেল-মোটেল, সমুদ্র সৈকত, বিলাসবহুল ভিলা, শপিং মল, ওয়ার্টার পার্ক ও থিম পার্ক নিয়ে এই সব প্রকল্প। এখানেও তিনি হেড স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন।